প্রখ্যাত ইসলামিক স্কলার এবং পবিত্র কাবা শরিফের ইমাম (সাবেক), ড. শায়েখ হাসান বিন আবদুল হামিদ বুখারি, প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ সফরে আসছেন। তিনি মক্কার উম্মুল কুরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন এবং সৌদি আরবের সর্বোচ্চ ওলামা বোর্ডের ফকিহ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। আগামী ১৭ জানুয়ারি তিনি ঢাকায় পৌঁছাবেন। তাঁর এই সফর ইসলামিক জ্ঞানের প্রসার এবং বাংলাদেশ-সৌদি আরব সম্পর্কের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
কাবা শরিফের ইমাম বুখারি (সাবেক) সফর পরিকল্পনা
ফেনী রঘুনাথপুর দারুল উলুম মুহিউস সুন্নাহ মাদরাসার মুহতামিম মাওলানা সালাহউদ্দিন জাহাঙ্গীর তাঁর সফরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। সফরের প্রথম দিন, ১৭ জানুয়ারি, তিনি ফেনীর রঘুনাথপুরে অনুষ্ঠিতব্য দশম আন্তর্জাতিক সম্মেলনে জুমার নামাজের ইমামতি করবেন। এরপর হেলিকপ্টারযোগে ঢাকায় ফিরে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক সম্মেলনে অংশগ্রহণ করবেন এবং মাগরিবের নামাজের ইমামতি করবেন।
আন্তর্জাতিক সম্মেলনের গুরুত্ব
জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের পূর্ব চত্বরে আয়োজিত এই আন্তর্জাতিক সম্মেলন বাংলাদেশসহ সৌদি আরব, মিশর, ইরান, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইংল্যান্ড, ভারত এবং পাকিস্তানের প্রখ্যাত ইসলামিক স্কলারদের মিলনস্থল হবে। সম্মেলনে অংশ নেবেন বিশিষ্ট আলেম, কারিগণ, সরকারের উপদেষ্টা, ব্যবসায়ী, রাজনীতিবিদ এবং বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও কূটনীতিকরা।
ড. শায়েখ বুখারির জীবনী
ড. শায়েখ হাসান বিন আবদুল হামিদ বুখারি ইসলামিক স্কলারশিপের একটি উজ্জ্বল নাম। তিনি মক্কা নগরীর উম্মুল কুরা বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষা অর্জন করেন এবং একই প্রতিষ্ঠানে ডিন হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি কাবা শরিফের ইমাম ও খতিব হিসেবে দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করেছেন। আরো জানুনঃ শবে মেরাজ ২০২৫ কবে?:
কাবা শরিফের ইমাম হিসেবে দায়িত্ব পালন
২০০০ থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত তিনি মসজিদ আল হারামাইন শরিফের অভ্যন্তরীণ একাডেমিতে শিক্ষকতা করেন। ২০০৪ সালে তিনি উম্মুল কুরা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি ভাষা ইনস্টিটিউটে প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন। ২০১৫ সালে বাদশাহ সালমান বিন আব্দুল আজিজ তাঁকে পবিত্র মক্কা হারামাইন শরিফের অতিথি ইমাম হিসেবে নামাজ পড়ানোর সুযোগ দেন।
ইসলামিক জ্ঞানে তাঁর অবদান
ড. শায়েখ হাসান, হাদিস এবং ইসলামিক ফিকহের উপর গভীর জ্ঞান রাখেন। তাঁর লেখা গ্রন্থ এবং গবেষণাপত্র আন্তর্জাতিকভাবে সমাদৃত। বক্তৃতা এবং লেখালেখির মাধ্যমে তিনি ইসলামের শিক্ষা বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি তরুণ প্রজন্মের মধ্যে ইসলামিক জ্ঞানের প্রসার এবং আধুনিক প্রেক্ষাপটে ইসলামের সঠিক ব্যাখ্যা প্রদানের ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন। তাঁর শিক্ষা এবং নেতৃত্ব ইসলামিক জ্ঞানের গভীরতা ও বৈচিত্র্যকে আরও সমৃদ্ধ করেছে।
ড. শায়েখ হাসানের এই সফর বাংলাদেশের ইসলামিক শিক্ষাঙ্গনে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে বলে মনে করা হচ্ছে। তিনি বাংলাদেশের ইসলামিক স্কলারদের সঙ্গে মতবিনিময়ের মাধ্যমে জ্ঞানের আদান-প্রদান এবং ধর্মীয় মূল্যবোধের প্রসারে সহায়তা করবেন।
তাঁর বক্তৃতা এবং সম্মেলনে উপস্থিতি তরুণ প্রজন্মের মধ্যে ইসলামের সঠিক ব্যাখ্যা এবং চর্চার প্রতি আগ্রহ বাড়াবে। এ সফর বাংলাদেশ এবং সৌদি আরবের মধ্যকার সম্পর্ক উন্নয়নে একটি মাইলফলক হিসেবে কাজ করবে।
ড. শায়েখ হাসান বিন আবদুল হামিদ বুখারির উপস্থিতি এবং বক্তব্য বাংলাদেশের ইসলামিক শিক্ষা ও সংস্কৃতিতে গভীর প্রভাব ফেলবে। ইসলামের আলোচনায় নতুন মাত্রা যোগ করার এই প্রয়াস বাংলাদেশ এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সমাদৃত হবে।
FAQs
১. ড. শায়েখ হাসানের এই সফরের মূল উদ্দেশ্য কী?
ড. শায়েখ হাসানের এই সফরের মূল উদ্দেশ্য ইসলামিক জ্ঞানের প্রসার এবং বাংলাদেশে ইসলামিক শিক্ষার মান উন্নত করা।
২. তিনি কবে বাংলাদেশে পৌঁছাবেন?
তিনি আগামী ১৭ জানুয়ারি ঢাকায় পৌঁছাবেন।
৩. সফরে তিনি কোন কোন কর্মসূচিতে অংশ নেবেন?
তিনি ফেনীর রঘুনাথপুরে জুমার নামাজের ইমামতি এবং ঢাকায় জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে মাগরিবের নামাজের ইমামতি করবেন।
৪. সম্মেলনে আর কারা উপস্থিত থাকবেন?
সম্মেলনে বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশের প্রখ্যাত আলেম, কারিগণ, ব্যবসায়ী, রাজনীতিবিদ এবং কূটনীতিকরা উপস্থিত থাকবেন।